মন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে হাওড়ে শতভাগ, উপকূলীয় অঞ্চলের ১৭ জেলায় শতকরা ৯৬ ভাগসহ সারা দেশে গড়ে ৭২ শতাংশ বোরো ধান কর্তন করা হয়েছে। ফলে, ক্ষতির পরিমাণ সামান্য যাতে আমাদের খাদ্য উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়বে না।’
বৃহস্পতিবার বিকালে ঘূর্ণিঝড় আম্পান পরবর্তী অনলাইন প্রেস ব্রিফিংয়ে কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সাতক্ষীরার আম বাগানের। সাতক্ষীরার মোট ৪ হাজার হেক্টর আম চাষের মধ্যে মাত্র ১ হাজার হেক্টর থেকে আম তুলতে পেরেছিল চাষিরা।’
যেকোনো ঘূর্ণিঝড়ে কৃষিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এবার ঘূর্ণিঝড়ের খবর পেয়ে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ১৫ মে থেকে সচেতন ছিলেন। আমাদের আগাম প্রস্তুতি থাকার কারণে তুলনামূলক কম ক্ষতি হয়েছে।’
কোন ফসলের কতটুকু ক্ষতি হয়েছে: মন্ত্রীর দেয়া তথ্যানুসারে দেশের ১ লাখ ৭৬ হাজার ৭ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসলের ক্ষতির মধ্যে- বোরো ধান ৪৭ হাজার ২ হেক্টর (শতকরা ১০ ভাগ), ভুট্টা ৩ হাজার ২৮৪ হেক্টর (৫ ভাগ), পাট ৩৪ হাজার ১৩৯ হেক্টর (৫ ভাগ), পান ২ হাজার ৩৩৩ হেক্টর (১৫ ভাগ), সবজি ৪১ হাজার ৯৬৭ হেক্টর (২৫ ভাগ), চিনাবাদাম ১ হাজার ৫৭৫ হেক্টর (২০ ভাগ), তিল ১১ হাজার ৫০২ হেক্টর (২০ ভাগ), আম ৭ হাজার ৩৮৪ হেক্টর (১০ ভাগ), লিচু ৪৭৩ হেক্টর (৫ ভাগ), কলা ৬ হাজার ৬০৪ হেক্টর (১০ ভাগ), পেঁপেঁ ১ হাজার ২৯৭ হেক্টর (৫০ ভাগ), মরিচ ৩ হাজার ৩০৬ হেক্টর (৩০ ভাগ), সয়াবিন ৬৪০ হেক্টর (৫০ ভাগ), মুগডাল ৭ হাজার ৯৯৭ হেক্টর (৫০ ভাগ) এবং আউশ ৬ হাজার ৫২৮ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি প্রাথমিক তথ্য। চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে দিতে পারব।’
আম্পানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বিনামূল্যে সার, বীজ ও নগদ সহায়তাসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দেয়া হবে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শাকসবজি ও মসলা চাষিদের তালিকা প্রণয়ন করে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমন মৌসুমে বিনামূল্যে সার, বীজ ও নগদ সহায়তাসহ বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান করা হবে।’
এছাড়াও, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, ফল ও পান চাষিদের মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষি ঋণের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।